ছোবাহান মিয়া, মাদারীপুর জেলা প্রতিনিধি:
মাদারীপুর জেলার শিবচরের দ্বিতীয় খন্ড ইউনিয়নের মালেরকান্দি গ্রামে বিষাক্ত সাপের ছোবলে শারমিন আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূর মৃত হয়েছে। নিহত শারমিন আক্তার একই এলাকার খলিল মোল্লার স্ত্রী।
রবিবার ( ২৭ এপ্রিল) বেলা দুই টার দিকে শারমিনের বাপের বাড়ি খড়ের বসতি ঘরের মধ্যে ঘটনাটি ঘটে।
নিহতের বাবা দিলু হাওলাদার বলেন, আমার মেয়ে ২ টার দিকে হঠাৎ চিৎকার করে ওর মাকে বলে মা আমাকে কিসে যেনো কামর দিছে, খড়ের বসতি ঘরের তাঁকের উপরে মোবাইল চার্জে ছিলো। মোবাইল তাকের উপরে আনতে হাত দিলে হঠাৎ বাম হাতের আঙ্গুলে কামর দেয়। তাত্ক্ষণিক শারমিনকে সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্মরত ডাক্তার শারমিনকে রক্ত টেস্ট দেয়। রক্ত টেস্ট করে কিছু ধরা পরে নাই। এর পরে ডাক্তার বলে রুগীকে ভর্তি করা লাগবে। ডাক্তারের কথা শুনে শারমিনকে মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি করি। হঠাৎ তিন টার দিকে আমার মেয়ে বলে বাবা আমার গলা শুকিয়ে আসে এবং দুর্বল হয়ে যায়। তারাতাড়ি করে ডাক্তারকে খবর দিলে ডাক্তার সাথে সাথে ওয়ার্ডে আসে। এর পরে ডাক্তার ভ্যাকসিন দেয়। তার কিছুক্ষন পরে ডাক্তার বলে আপনার মেয়ে মারা গেছে।
তিনি আরো বলেন, আমার মেয়েকে বাঁচানোর জন্য চরশ্যালাইম এক ওঝার ঝাড়ফুঁক করি, কোনো উন্নতি না হওয়ায় আবার বড়দুয়ালি আরেক ওঝা বাবুল ফকিরের কাজে নিয়ে যাই সেও ঝাড়ফুঁক করে তাতেও উন্নতি না হওয়ায় চলে আসি বাড়িতে। সন্ধ্যায় শুরু হয় বি কে নগর ইউনিয়নের আরেক ওঝা শুরু করে ঝাড়ফুঁক। ওনি কিছু না করতে পারলে শুরু হবে, বাহাদুরপুর থেকে আসা আরেক ওঝার ঝাড়ফুঁক। নিহতের বাবা বলেন চার বছরের একটি ছেলে রেখে গেছেন শারমিন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে কর্মরত ডাক্তার বলেন, রুগীকে আমরা প্রথমত রক্ত টেস্ট করি। রক্ত টেস্টে নরমাল আসে। রুগীকে ভর্তি করার পরামর্শ দিলে রুগীর স্বজনরা রুগীকে ভর্তি করাবে না ওঝার কছে নিয়ে যাবে, এর পরে রুগীরকে ভর্তি করি। এবং রুগীকে অনেক বার অনুরোধ করি এবং রুগীর স্বজনদেরও অনুরোধ করি আপনাদের রুগীকে ভ্যাকসিন দেওয়া লাগবে। রুগী এবং রুগীর স্বজনরা বাধাদেয়, বলে ভ্যাকসিন দিলে রুগীর খতি হবে। এর পর আধাঘন্টা পরে রুগীর স্বজনরা বলে রুগীর গলা শুখিয়ে আসে আর চোখে ঝাপসা দেখে। তারাতাড়ি করে রুগীর কাছে যা-ই যেয়ে দেখি রুগীর অবস্থা ভালো নয়। এর পরেও ভ্যাকসিন দিতে রাজি হননি। রুগীর অবস্থা আরো খাবার হলে তখন বলে ভ্যাকসিন দেন। এতোক্ষণে রুগীর অবস্থা শেষ পর্যায়ে। পরে রোগীটি মারা যায়
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রতন শেখ বলেন, এবিষয় এখনো কোন থানায় অভিযোগ হয় নাই। অভিযোগ করলে আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থানিবো।
আপনার মতামত লিখুন :